জাতীয় সংসদের হুইপ জাতীয় সংসদের একজন সদস্য। তিনি সরকারি দলের হয়ে থাকেন। গত ২২-০১-২০২৪ তারিখ মাননীয় রাষ্ট্রপ্রতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সাহেব জাতীয় সংসদের হুইপদের নিয়োগ দেন। সংসদ সচিবালয় থেকে চীফ হুইপ ও হুইপ নিয়োগের ব্যাপারে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।
মাননীয় রাষ্ট্রপতি বর্তমানে মাদারীপুর-১ আসনে নির্বাচিত বাংলাদেশ আওয়ামীলিগের সংসদ সদস্য জনাব নূর-ই-আলম চৌধুরীকে দ্বাদশ সংসদের চিফ হুইপ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি একাদশ সংসদ পরিষদেরও দায়িত্বপালন করেছিলেন। আরো ৫ জন সংসদ সদস্যকে হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন।
বর্তমানে জাতীয় সংসদের হুইপদের তালিকা –
১। নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন (চীফ হুইপ):
নূর-ই-আলম চৌধুরী বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। তিনি মাদারীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি ১৯৬৪ সালে ১ জুন মাদারীপুর জেলার শিবচর থানাধীন দত্তপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
২। ইকবালুর রহিম:
ইকবালুর রহিম বাংলাদেশের দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।তিনি ১৯৬৫ সালে ১৬ আগস্ট দিনাজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
৩। মো. নজরুল ইসলাম :
মো: নজরুল ইসলাম বাবু বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। তিনি ১৯৬৭ সালে ১০ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের বাজবী মৌলভী বাড়ী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাছাড়া তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
৪। আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন :
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি ১৯৬৯ সালে ২১ শে সেপ্টেম্বর জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার টিএন্ডটি পাড়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
সংবিধান অনুযায়ী দশম জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ৩ জানুয়ারী ২০১৯ তারিখে একাদশ সংসদের সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি শপথ বাক্য পাঠ করেন।
৫। সাইমম সরওয়ার :
সাইমুম সরওয়ার কমল হলেন বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ ও কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি ১৯৭০ সালে ২ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলার রামুর ফতেখাঁরকুর ইউনিয়নের মন্ডল পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
৬। মাশরাফি বিন মুর্তজা
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ১৯৮৩ সালে ৫ অক্টোবর নড়াইল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হলেন একজন বাংলাদেশী ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ, যিনি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক টেস্ট, ওয়ানডেতে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ছিলেন এবং বর্তমানে নড়াইল-২ আসন থে
কে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য। ইএসপিএন কর্তৃক পরিচালিত “ওয়ার্ল্ড ফেইম ১০০” এ বিশ্বের সেরা ১০০ জন ক্রীড়াবিদের মধ্যে অন্যতম। অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে ১০০টি উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে তিনি ৫ম বোলার।
জাতীয় সংসদের হুইপের কাজ কোনটি ?
জাতীয় সংসদের শৃঙ্খলা রক্ষা করা হুইপদের প্রধান দায়িত্ব। এছা্ড়া সংসদের কর্মকান্ডে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভোটাভুটিতে দলীয় সংসদ সদস্যদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা, আইন প্রণয়নে উপস্থিত থাকা, কোন সংসদ সদস্য অনুপস্থিত থাকলে তাদের পক্ষে কথা বলাসহ সংসদের প্রয়োজনীয় কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করা হুইপের কাজ।
হুইপের পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা
চীফ হুইপ একজন পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদার সমান সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন। হুইপ একজন প্রতিমন্ত্রীর সমান সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন। চীফ হুইপ একজন একান্ত সচিব (PS), একজন সহকারি সচিব (APS), আরো দুইজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, একজন বাহক, দুইজন অফিস সহকারী এবং একজন পাচক সরকারের পক্ষ থেকে পাবেন। তাছাড়া ৮ জন পুলিশ সদস্য এবং ২ জন গানম্যান সুবিধাও পাবেন।
একজন মন্ত্রীর মাসিক বেতন ১,০৫,০০০ টাকার সমপরিমাণ বেতন চীফ হুইপ পাবেন। সাধারণ হুইপরা প্রতিমন্ত্রীর সমপরিমাণ বেতন ৯২,০০০ টাকা প্রতিমাসে সরকারের পক্ষ থেকে পাবেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর চীফ হুইপ একটি সুসজ্জিত সরকারি বাসভবন বিনাভাড়ায় পাবেন। অন্যান্য হুইপ বা প্রতিমন্ত্রীরাও বাড়ির সুবিধা পেয়ে থাকেন। মন্ত্রীরা বা চীপ হুইপ যদি সরকারি বাসভবনে না থাকেন তাহলে বেতনের পাশাপাশি আরো ৮০,০০০ টাকা পাবেন। এক্ষেত্রে প্রতিমন্ত্রী বা সাধারণ হুইপরা ৭০,০০০ টাকা করে পাবেন। তাছাড়া বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাড়তি তিনমাসের ভাড়ার সমপরিমাণ অর্থও বছরে পাবেন।
সরকারের পক্ষ থেকে নিজ এলাকায় উন্নয়নের জন্য মন্ত্রীরা প্রতিবছর ১০,০০,০০০ টাকা, প্রতিমন্ত্রী বা হুইপদের ৭,০০,০০০ টাকা, উপমন্ত্রীদের ৫,০০,০০০ টাকা করে প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে কোনো প্রকল্প বা পজেক্টের জন্য বিশেষ বাজেটের আওতায় প্রকল্পভিত্তিক অর্থও উন্নয়নের জন্য পেয়ে থাকেন।