ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভূষিত বরেণ্য শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভূষিত বরেণ্য শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা

ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভূষিত হচ্ছে বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে আর্বিভূত বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় এক প্রেস নোটে ২৫-০১-২০২৪ তারিখ বৃহস্পতিবার সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননায় ভূষিত করেছেন। 

ভারতরত্ন হচ্ছে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা। তারপরে রয়েছে পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী সম্মাননা।

ভারত সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য প্রতিবছর এই সম্মাননা দিয়ে থাকেন। এবছর মহাভারত সরকার ১৩২ জনকে পদ্ম সম্মাননা, ৫ জনকে পদ্মবিভূষণ, ১৭ জনকে পদ্মভূষণ এবং ১১০ জনকে পদ্মশ্রী সম্মাননা দিচ্ছেন। প্রজাতন্ত্র দিবসকে সামনে রেখে ভারত সরকার প্রতিবছর পুরস্কার প্রাপ্যদের নাম ঘোষণা দিয়ে থাকেন।

সাধারণত মার্চ বা এপ্রিল মাসে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ভবনে এক আনুষ্ঠানিক প্রোগামের মাধ্যমে এ পুরস্কারগুলো প্রাপ্যদের কাছে তুলে দিয়ে থাকেন। এর আগে ভারত সরকার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশের সনজীদা খাতুন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসর প্রাপ্ত) সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতিককে পদ্মশ্রী সম্মাননায় ভূষিত করেছিলেন। তারও আগে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও বিশিস্ট কূটনীতিবিদ সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীকে ভারত সরকার পদ্মভূষণ সম্মাননায় ভূষিত করেছিলেন। প্রত্নতত্ত্ববিদ এনামুল হক এবং বিশিষ্ট সমাজকর্মী ঝর্ণাধারা চৌধুরীকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করেন ।

‘সুরের ধারা’ নামক সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা সংগীত নিয়ে কয়েকটি বইও লিখেছেন। তিনি ১৯৯২ সালে সুরের ধারা সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন।  তিনি সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশের বেসামরিক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ পেয়েছিলেন এবং বঙ্গভূষণ পদক পান ২০১৭ সালে।

শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার জন্ম: 

শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ১৯৫৭ সালের ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশের রংপুর জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাজহার উদ্দিন খান এবং মাতার নাম ইসমাত আরা খান। তার পিতা একসময় কাকলী উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন উপাধ্যক্ষ ছিলেন। তার স্বামীর নাম জি এইচ চৌধুরী। 

শিল্পীর কর্মময় জীবন –

তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের খ্যাতনামা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের অধ্যাপক ও নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপার্সন হিসেবে কর্মরত। সেই সাথে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশন কলা অনুষদের একজন সম্মানিত ডিন এবং সংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।

শিল্পীর প্রকাশিত বিখ্যাত অ্যালবামসমূহ-

স্বপ্নের আবেশে (২০১৪), সকাল সাঝে, ভোরের আকাশে (২০১২), লাগুক হাওয়া (২০১২), আপন পানে চাহি, প্রাণ খোলা গান (২০১১), এলাম নতুন দেশে, সুদূরের মিতা, মাটির ডাক, কালের সাথী, গেঁথেছিনু অঞ্জলি, মনের মাঝে যে গান বাজে, মোর দরদিয়া, সুরের আসনখানি, সুরের খেয়া, পাতার ভলা ভাষাই, শ্রাবণ তুমি, ছিন্নপত্র (২০০৪), কবি প্রণাম (২০০৪), বাজে রম্যবীণা ইত্যাদি।

ব্যক্তিগত জীবন

শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা দুসন্তানের জননী। তার স্বামীর নাম জি এইচ চৌধুরী। মেয়ে প্রিয়দর্শিনী এবং ছেলে অর্ক দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পড়াশোনা শেষ করে সেখানেই কর্মরত আছেন। আর তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগে অধ্যাপনা করছেন।

শিক্ষাগুরু

শিল্পী শিক্ষাগুরু হিসেবে পেয়েছেন- প্রখ্যাত শিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তিদেব ঘোষ, নীলিমা সেন, মনজু বন্দ্যোপাধ্যায়, শৈলজারঞ্জন মজুমদার, অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ আরো বরেণ্য সংগীতগুরু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *