Class Eight 8 Digital Technology Book

সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, কেমন আছো? তোমাদেরকে জানাই নতুন বছরের শুভেচ্ছা । আমরা আজকে অষ্টম শ্রেণি-শিখন অভিজ্ঞতা-১ (তথ্য যাচাই অভিযান) এ বিষয়বস্তু আলোচনা করব। শুরুতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ  তথ্য তোমাদের না জানালে হয় না।  তোমরা তো জানো নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে তোমাদের পড়াশোনার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। 

জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ এবং বিস্তারিত শিক্ষাক্রম ২০২২ এর মূল লক্ষ্য মুখস্ত ও পরীক্ষা  নির্ভরতা হ্রাস করে হাতে-কলমে বাস্তব অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।

নতুন শিক্ষাক্রমের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো-

হাতে-কলমে শিক্ষা, শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক পাঠদান, আনন্দঘন পরিবেশে পাঠদান, যোগ্যতাভিত্তিক জ্ঞান অর্জন,  দলবদ্ধভাবে শিখন, শিখনকালীন ধারাবাহিক মূল্যায়ন, ঝুঁকি ও নিশ্চয়তা মোকাবেলার সামর্থ্য অর্জন, কোচিং গাইড নির্ভরতা হ্রাসকরণ, শিক্ষা ব্যয় হ্রাসকরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, বৈশ্বিক  নাগরিকতা অর্জন, ডিজিটাল স্বাক্ষরতা অর্জন ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক জ্ঞান অর্জন।

এখন তোমরা তোমাদের পাঠ্যবইয়ের ‘শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কথা’ বিষয়বস্তুটুকু পড়ে নাও। যার সার-সংক্ষেপ আমি এখানে সংক্ষেপে তুলে ধরছি।

নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী হিসেবে এই শিক্ষাক্রম আর নতুন পড়ালেখার পদ্ধতি থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে তোমাদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। তোমাদের প্রতিটি অভিজ্ঞতার সম্পন্ন করতে হবে নির্দিষ্ট কিছু কাজের মাধ্যমে। কিছু কাজ তোমরা একা করতে পারবে আবার কিছু কাজ তোমাদেরকে দলীয়ভাবে সম্পন্ন করতে হবে, প্রয়োজনে শিক্ষক ও অভিভাবকের সহযোগিতাও তোমাদের নিতে হবে  ।

তোমরা তো জানো এখন পড়াশোনা শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তক-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমাদেরকে আমাদের আশেপাশের সবকিছুকে অনুসন্ধানের চোখে দেখতে হবে, যৌক্তিক প্রশ্ন করে সঠিক উত্তর খুঁজে বের করতে হবে।  নিজেকে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বিশ্ব নাগরিক হিসেবে টিকে থাকতে হলে আমাদেরকে জানার ও জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে। বৈশ্বিক ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার জন্য অষ্টম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি বইটি আমাদের জন্য অনেকটাই সহায়ক হবে। অষ্টম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি বইটি এখান থেকে সহজে  আমরা ডাউনলোড করতে পারবো। Download

ডিজিটাল প্রযুক্তি কী?

‘Digit’ শব্দের অর্থ সংখ্যা, ‘Digital’ শব্দের অর্থ সংখ্যাভিত্তিক। এখানে সংখ্যা বলতে বাইনারি সংখ্যা 0,1 কে নির্দেশ করে।

ডিজিটাল প্রযুক্তি হলো সংখ্যা ভিত্তিক ইলেকট্রনিক টুল, সিস্টেম, ডিভাইস এবং রিসোর্স যা ডেটা তৈরি, গাণিতিক সমাধান, সঞ্চয় বা প্রক্রিয়া করে নিজের ও মানব কল্যাণসাধন করে।

সেশন-১ (ভুল তথ্যের রকমফের) (পাঠ্য বই-পৃষ্ঠা: ১)

প্রথমে আমরা জানব তথ্য কী? 

তথ্য: তথ্য বা ইনফরমেশন হচ্ছে কোন ব্যক্তি, ঘটনা বা বিষয়বস্তু সংক্রান্ত বার্তা, যা বোঝা যায়, বহন করা যায়, বলা বা লেখা যায়।

তথ্য ও উপাত্ত( Data)এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। 

উপাত্ত হচ্ছে তথ্যের ক্ষুদ্রতম একক। উপাত্ত একটি একক ধারণা। ডেটা (Data) শব্দটি ল্যাটিন শব্দ Datum-এর বহুবচন। Datum অর্থ হচ্ছে তথ্যের উপাদান। তথ্যের অন্তর্ভুক্ত ক্ষুদ্রতর অংশসমূহ হচ্ছে ডেটা বা উপাত্ত। যেমন-আমাকে কেউ যদি আমার পরিচয় জিজ্ঞাসা করে তখন আমি আমার সম্পর্কে যা-ই বলব তাই হচ্ছে  তথ্য। আর শুধুমাত্র আমার নাম বা বয়স যদি বলি তাহলে সেটাই হবে উপাত্ত বা ডেটা। ডেটা যেকোনো প্রতিক, সংখ্যা, অক্ষর, ছবি ইত্যাদি হতে পারে।

আমরা বর্তমানে ডিজিটাল ডিভাইসের সুবিধার্থে বিভিন্ন ধরনের তথ্য অনলাইন ও সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পেয়ে থাকি। এসকল তথ্য সবসময় সঠিক হয় না। আমাদের অত্যন্ত সর্তকতার সাথে তথ্যগুলোর সঠিকতা যাচাই করে নিতে হবে। অন্যথায় আমাদের ভুল তথ্য ব্যবহারের জন্য বড়ধরনের মাসুল দিতে হবে।

আমরা এ সেশন থেকে বিভিন্ন ধরনের ভুল তথ্য যাচাই করা শিখব এবং গুগল ফরম ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তথ্যের সঠিকতা যাচাই করার ব্যবস্থা করবো।

আমাদের পাঠ্য বইতে তিনিটি পরিস্থিতি দেওয়া আছে এখন আমরা সেগুলো একবার পড়ব এবং তার সমাধান বা তথ্য যাচাই প্রক্রিয়াও দেখে নেব। (ছক:১.১) (পাঠ্য বই-পৃষ্ঠা: ২)

Class eight digital projukti Shikhon Oviggota 1

পরিস্থিতি ১ (সমাধান) -পাঠ্য বইতে দেওয়া আছে) 

Class eight digital projukti shikhon oviggota 1

ডিজিটাল প্রযুক্তি ৮ম শ্রেণি

পরিস্থিতি -২ (সমাধান) (পাঠ্য বই-পৃষ্ঠা: ৩)

আমি যেভাবে সঠিক তথ্য যাচাই করতাম: আমি একাধিক টেলিভিশন, ইউটিউব, সোস্যাল মেডিয়াতে একই ভিডিও প্রতিবেদনটি দেখতাম এবং তারিখ ও লোগো  যাচাই করতাম।  আমি খোঁজার চেষ্টা করতাম সকল মাধ্যমে একই ধরনের তথ্য আছে কিনা। ভিডিওটিতে ভয়েস ওভার পরিবর্তন করলে ভিডিওর সাথে ভয়েস ওভারের কোনো ত্রুটি আছি কিনা দেখতাম। তখন আমি বুঝতে পারতাম প্রতিবেদনটি সঠিক নাকি ভুল তথ্য বা ফেইক।

ডিজিটাল প্রযুক্তি ৮ম শ্রেণি

পরিস্থিতি -৩ (সমাধান) (পাঠ্য বই-পৃষ্ঠা: ৩)

আমি যেভাবে সঠিক তথ্য যাচাই করতাম: আমি প্রথমে জানার চেষ্টা করতাম উক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আগে কে ছিলেন,তার নাম ও পরিচয় কী? বিভিন্ন নিউজ মিডিয়া ও সোস্যাল মিডিয়াতে একাধিক লেখা বা কনটেন্ট দেখে সঠিক তথ্যটি খুঁজে বের করতাম। 

তথ্য যাচাই করার লক্ষ্যে Google Form তৈরি করি- 

গুগল ফর্ম তৈরি করার জন্য আমাদেরকে জিমেইল একাউন্ট লগইন করে গুগল ড্রাইভে যেতে হবে।  এক্ষেত্রে আমরা পাঠ্য বইয়ের ধাপগুলো অনুসরণ করে কাজটি সম্পন্ন করব। 

Google Drive

গুগল ড্রাইভে গিয়ে প্লাস (+) আইকনে ক্লিক করলে গুগলের অনেকগুলো সার্ভিসের মধ্যে আমাদেরকে Google Forms -এ ক্লিক করে ‍গুগল ফর্মে প্রবেশ করতে হবে। জিমেইল একাউন্টে লগিন থাকা অবস্থায় আমাদের প্রোফাইল ছবির বাম পাশের Google Apps মেনুবারে প্রবেশ করে তার একদম নিচের দিকে গেলেও  আমরা গুগল ফর্ম অপশনটি খুঁজে পাবো। সেখান থেকেও গুগল ফর্মে আমরা প্রবেশ করতে পারবো। সেক্ষেত্রে গুগল ড্রাইভে প্রবেশ করার প্রয়োজন হবে না।

গুগল ফর্ম  তৈরির ক্ষেত্রে  আমরা পাঠ্য বইয়ের ধাপগুলো অনুসরণ করে কাজটি সম্পন্ন করব। আমাদের মনে রাখতে হবে গুগল ফর্মের প্রশ্ন যাতে ৩-৪টি চেয়ে বেশি না হয়। যেমন- ফর্মের প্রশ্ন হতে পারে-

১। নাম, বয়স, ইমেইল এড্রেস প্রদানের অপশন।

২। আপনি কি ইন্টারনেটের কোনো ছবি, ভিডিও, খবর দেখে ঐ তথ্য সঠিকতা নিয়ে সন্দেহ/ সংশয়/ বিভ্রান্তি অনুভব করেন? 

৩। আপনার দেখা কোনো খবর নিয়ে সংশয়/ বিভ্রান্তি হলে খবরটির শিরোনাম বা লিংক নিচে উল্লেখ (পেস্ট) করুন।

৪।  আপনার দেখা কোনো ছবি/ ভিডিও নিয়ে বিভ্রান্তি হলে ছবি/ ভিডিওর লিংক নিচে উল্লেখ (পেস্ট) করুন। ইত্যাদি।

গুগল ফর্ম তৈরি হয়ে গেলে আমরা ফর্ম এর লিংকটি ফর্মের ডান কোণায় থাকা Send বাটনে ক্লিক করে আমাদের পরিচিত জনদের ই-মেইল ঠিকানায় পাঠাব এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উপযুক্ত তথ্যসহ সাবমিট করতে বলব। এক্ষেত্রে আমাদেরকে দুই সপ্তাহ সময় দিতে হবে । এভাবে আমরা প্রথম সেশনের কাজ সম্পন্ন করবো।

শিখন অভিজ্ঞতা-১ সেশন-২ (কনটেন্ট এর ভিন্নতা)

তোমরা নিশ্চয়ই জানো গত সেশনে আমরা গুগল ফ্রম তৈরি করে তথ্যের জন্য অভিভাবকের কাছে পাঠিয়েছিলাম। এক সপ্তাহ পরে আমরা প্রাপ্ত তথ্যগুলো সংগ্রহ করে যাচাই করতে পারবো।

আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মাধ্যম থেকে কন্টেন পেয়ে থাকি বা সংগ্রহ করে থাকি এ সমস্ত কন্টেন্টগুলোর উদ্দেশ্য ভিন্ন হয়ে থাকে এখন আমরা কন্টেন্টের উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করবো।

তথ্য প্রচার:  নিরপেক্ষভাবে তথ্য প্রচারের জন্য যে ধরনের কন্টেন্ট ব্যবহার করা হয়। যেমন সংবাদপত্র,  টেলিভিশনের প্রতিবেদন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, ব্রেকিং নিউজ, অনলাইন সংবাদ ইত্যাদি এগুলোর মাধ্যমে নিরপেক্ষ সংবাদ প্রচার করা হয়।

বিনোদন: কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির ব্যক্তি বা লক্ষ্যদলকে বিনোদন দেওয়ার জন্য – নাটক, চলচ্চিত্র, ছবি, গান, খেলা-ধুলা ইত্যাদি প্রচার করা হয়।

সচেতনতা তৈরি: জনমনে বিভিন্ন বিষয়সংক্রান্ত সচেতনতা তৈরির জন্য নাটক, গান, বক্তব্য, বিবৃতি ইত্যাদি  প্রচার করা হয়।

মতামত প্রদান: কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তার ইতিবাচক বা নেতিবাচক দিক নিয়ে মতামত ব্যক্ত করতে  পত্রিকার পাঠকের চিঠি, সাধারণ মানুষের সাক্ষাৎকার, ব্লগ বা  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা হয়।

ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রচারণা: টেলিভিশন, পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন, কোনো বিখ্যাত ব্যক্তির ইতিবাচক বক্তব্য ইত্যাদি কোনো নির্দিষ্ট একটি পণ্য বা সেবার উপর ভিত্তি করে ব্যবসায়িক প্রচার ও প্রশারের জন্য তৈরি করা হয়।

এখন আমরা কনটেন্টের উদ্দেশ্য নিয়ে পাঠ্য বইতে ৭ পৃষ্ঠায় দেওয়া ছক ১.২ পূরণ করব।

ডিজিটাল প্রযুক্তি ৮ম শ্রেণি ছক ১.2

এখন আমরা প্রয়োজনীয় তথ্যের ভুল উৎস ও সঠিক উৎস কী তা নিজেরা আলোচনা করে পাঠ্য বইয়ে পৃষ্ঠা -৮ দেওয়া তথ্য ছক ১.৩ পূরণ করি।

Class-Eight-Digital-Projukti-Shikhon-Oviggota-1-সমাধান

বাড়ির কাজ: 

এপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা জোড় – বিজোড় আইডি বা রোল অনুযায়ী দুইটি করে নাটক, ফিকশন বা বিজ্ঞাপন দেখে একটি বিজ্ঞাপন বা নাটকের স্ক্রিপ্ট বিদ্যালয়ে লিখে আনতে হবে। তার নমুনা নিচের দেওয়া হলো-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *