আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য নিচ্ছি এবং এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে দৈনন্দিন সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। ছোট পরিসরে উদাহরণ দিলে বলা যায়, বিদ্যালয়ের বাৎসরিক ছুটির তালিকা বা শিক্ষাপঞ্জি থেকে গ্রীষ্মের ছুটির সময় জেনে আমি পরিবারের সদস্যদের সাথে কবে বেড়াতে যেতে পারি তার সিদ্ধান্ত নিই বা ভিডিও সম্পাদনা (এডিটিং) করার জন্য কোন সফটওয়্যার বিনামূল্যে পাওয়া যায় এবং বড় ফাইল নিয়ে কাজ করা যায় সে তথ্য নিয়ে আমি সে সফটওয়্যার আমার কম্পিউটারে ইনস্টল করি।
এভাবে নানারূপে তথ্যের উপর আমরা নির্ভর করি। কিন্তু সকল তথ্য আবার সংবাদ না। সংবাদের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে। আমরা এই বৈশিষ্ট্য জানব এবং আজকের সেশনে সিদ্ধান্ত নিব আমরা আমাদের বিদ্যালয় বুলেটিনে কোনও বিষয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন বা আটিকেল লিখব।
সংবাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ-
সংবাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য চারটি। যথা- সময়োপযোগিতা, নৈকট্য, প্রভাব এবং ভারসাম্যতা।
সময়োপযোগিতা- যেকোনো তথ্য বা সংবাদ নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলেই এর গুরুত্ব হ্রাস পেতে থাকে। যেমন-আজকের খেলার জয়ের তথ্য কয়েকদিন পর কারো কাছে গুরুত্ব বা সময়োপযোগিতা নাও থাকতে পারে।
নৈকট্য: যেকোনো তথ্য বা সংবাদ কারো কাছে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে আবার কারো কাছে অপ্রয়োজনীয়ও হতে পারে।
প্রভাব: যে তথ্য বা সংবাদ ব্যাপক মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করে সে সংবাদ ততই গুরুত্বপূর্ণ।
ভারসাম্যতা: তথ্য বা সংবাদের অবশ্যই ভারসাম্যতা থাকতে হবে। একাধিক উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যই মানুষের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাই।
আমরা জেনে রাখলাম, যখন আমরা কোনো সংবাদ পরিবেশন করব তখন কোন কোন বিষয় আমাদের বিবেচনা করতে হবে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তির কোনো কাজ, জীবনযাপন বা বক্তৃতাও আকর্ষণীয় সংবাদ হয়ে উঠতে পারে। খেলোয়াড়, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচ্য।
সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, তা হলো ৬ক। একটি সংবাদে কী, কে, কোথায়, কখন, কীভাবে, কেন এই ছয়টি প্রশ্নের উত্তর থাকলে সংবাদটি পরিপূর্ণতা পায়। এছাড়া সংবাদ বা ঘটনাটির সাথে সম্পর্কিত উপাত্ত, ছবি, ভিডিও সংবাদের সাথে যুক্ত করলে এটি আরও বেশি বেশি গ্রহণযোগ্য ও আকর্ষণীয় হয়।
সংবাদের কাঠামোকে উল্টা পিরামিডের সাথে তুলনা করা হয়।
আমরা আজকে আমাদের আর্টিকেল বা নিবন্ধ লেখার বিষয়বস্তু ঠিক করব। বিষয়বস্তু ঠিক করার আগে একটি অনুশীলন করা যাক। নিচে একটি বিষয়বস্তু দেওয়া আছে, এই বিষয়বস্তুর সাথে সম্পর্কিত সংবাদ উপাদান কী হতে পারে তা নিজের মতো করে লিখি : (পাঠ্য বইয়ের ১৩ ও ১৪ পৃষ্ঠার কাজ)
আর্টিকেল বা নিবন্ধ লেখার জন্য সংবাদ উপাদান কী কী থাকতে পারে?
বিষয় : আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি।
যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাই : শিক্ষার্থী অনুপস্থিতির কারণ।
যে যে তথ্য থাকতে পারে : কেন শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত, তাদের সমস্যা কি পারিবারিক, সামাজিক নাকি
আর্থিক। ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে আগ্রহী কি না সেসকল তথ্য থাকতে পারে।
যে উপাত্ত (ডেটা) থাকতে পারে : বিদ্যালয়ে প্রতিটি ক্লাসে কতজন শিক্ষার্থী গড়ে অনুপস্থিত থাকে, সপ্তাহের কোন দিন শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত বেশি থাকে, কোন মাসে বেশি অনুপস্থিত থাকে ইত্যাদি।
যার যার সাক্ষাৎকার থাকতে পারে: শ্রেণির শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাক্ষাৎকার।
যে ধরনের ছবি বা ভিডিও ব্যবহার হতে পারে: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছবি, শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীদের ছবি, যারা যারা সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন তাদের ছবি বা ভিডিও ক্লিপ থাকতে পারে।
আমাদের অনুসন্ধানী বা গবেষণামূলক সংবাদ নিবন্ধ/আর্টিকেল/ব্লগ লেখার পরিকল্পনা :
এই অভিজ্ঞতা শেষে আমরা আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল তৈরি করব। সে পোর্টালে থাকবে আমাদের তৈরি নিবন্ধ বা আর্টিকেল/ব্লগ। আমরা আমাদের আশপাশ থেকে আমাদের ব্লগের বিষয়বস্তু ঠিক করব। মনে রাখতে হবে এমন বিষয়বস্তু নির্বাচন করব যার জন্য আমাদের উপাত্তের প্রয়োজন হবে। কারণ আমরা আগামী কিছু সেশনে উপাত্ত এবং তার উপস্থাপন নিয়ে কাজ করব।
নিচে কিছু বিষয়বস্তুর উদাহরণ দেওয়া হলো এবং সাথে ওই বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত উপাত্তের ধারণাও দেওয়া হলো।