সাইবার অপরাধ ও মানুষের জীবনে তার প্রভাব

৯ম শ্রেনি-ডিজিটাল প্রযুক্তি; শিখন অভিজ্ঞতা-২; সেশন-৩ -এ সেশনে আমরা আলোচনা করব সাইবার অপরাধ ও মানুষের জীবনে তার প্রভাব এবং সমাধানে করণীয়সমূহ।

ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে সাইবার অপরাধের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এসব অপরাধ সম্পর্কে আমাদের ধারণা রাখার পাশাপাশি আমাদের করণীয় সম্পর্কে আমাদের সচেতন হতে হবে।। এ পর্যায়ে আমরা সাইবার অপরাধের বিভিন্ন ঘটনা আমরা পর্যবেক্ষণ করব।

সাইবারস্টকিংয়ের ঘটনা

এই ঘটনাটি একটি সাইবারস্টকিংয়ের ঘটনা। 

সাইবারস্টকিং কী?

কোনো মানুষ বা কোনো গ্রুপ কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ভয় দেখানো বা বিরক্ত করা কিংবা হুমকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে কোনো বার্তা বা ছবি বা ডকুমেন্ট পাঠানোকে সাইবারস্টকিং বলে।

এবার আমরা আরো একটি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করব।

সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল হ্যাকিং এর ঘটনা

উপরের ঘটনাটিতে সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল হ্যাকিং এর শিকার হয়েছে।

সাধারণত সাইবার অপরাধ ‘ফিশিং’ এবং সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত একাউন্ট হ্যাক করা হয়। তখন  ঐ ব্যক্তির একাউন্টে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে বিব্রতকর পোস্ট করে তাকে হয়রানি করা হয় বা আইডি ফেরত দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

সাইবার অপরাধের প্রভাব-

(পাঠ্য বইয়ের ৩৭ পৃষ্ঠার কাজ)

ব্যক্তিগত প্রভাব-

এ ধরনের অপরাধের শিকার হওয়া ব্যক্তি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। তিনি হতাশা ও অস্থিরতায় ভোগেন। ব্যক্তির মনে হিনমন্যতা তৈরি হতে পারে। সমাধানের উপায় খুঁজে না পেলে ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তও নিয়ে নিতে পারে। 

পারিবারিক প্রভাব-

সাইবার অপরাধের প্রভাবে পারিবারিক শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অপরাধের শিকার হওয়া ব্যক্তির সাথে পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে ভুলবুঝাবুঝি তৈরি হতে পারে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে পারে।

সাংস্কৃতিক প্রভাব-

এধরনের কাজের প্রভাব সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও পড়ে থাকে। একাউন্ট হ্যাক হওয়া আইডিতে কোনো অপ্রীতিকর বা অশালীন  পোস্ট করলে তা দেশের যুব সমাজকে প্রভাবিত করে। এক্ষেত্রে সবাই প্রোফাইলের ব্যক্তিকে দোষারুপ করে থাকে। সমাজের মানুষেরা তাকে ঘৃণার চোখে দেখবে।

সাইবার অপরাধের প্রভাব

এবার আমরা আরো একটি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করব।

ফেইক সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টের ঘটনা

যখন কেউ অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি ব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি একাউন্ট খুলে তাকে ফেইক সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট বলা হয়।

এখন আমরা তাপসী নামক এক ব্যাংক কর্মকর্তার সাথে ঘটে যাওয়া সাইবার অপরাধের সম্ভাব্য বিপদ কী হতে পারে তা চিহ্নিত করব এবং সমাধানে করণীয়সমূহ লিখব।

সাইবার অপরাধের সম্ভাব্য বিপদ ও সমাধানে করণীয়-

(পাঠ্য বইয়ের ৩৮ পৃষ্ঠার কাজ)

সম্ভাব্য বিপদ- 

তাপসী সাহেবের ছবি ব্যবহার করে ফেইক আইডি খোলাতে তার মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। প্রতারক ফেইক আইডি তৈরির পাশাপাশি অশালীন ছবি মিডিয়াতে পোস্ট করাতে তার সামাজিক ভাবমূর্তি বিনষ্ট হবে এবং সম্মানহানী ঘটবে। পরিচিত মানুষের কাছে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করবে। তাছাড়া প্রতারক তার আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার করছে তা একসময় তাপসী সাহেবকেই পরিশোধ করতে হবে। 

(পাঠ্য বইয়ের ৩৯ পৃষ্ঠার কাজ)

সমাধানে করণীয়: 

তাপসী সাহেব একটি গুরুতর সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছেন। এই সমস্যা সমাধানে তাকে বেশ কিছু পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করতে হবে। সেগুলো হচ্ছে-

১। নিজের প্রকৃত আইডি থেকে সামাজিক সোশ্যাল মিডিয়াতে একাউন্ট হ্যাকের বিষয়টি সংক্রান্ত বিবৃতি দিতে হবে বা পোস্ট করতে হবে।

২। কাছের মানুষদেরকে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করতে হবে যাতে কেউ টাকা ধার দিয়ে প্রতারিত না হয়।

৩। নিকটস্থ থানায় প্রকৃত তথ্যের আলোকে অবহিত করা বা জিডি করা বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *