এই সেশনে আমরা সব কিছুর সমন্বয়ে একটি শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সাইবার অপরাধ সম্পর্কে সচেতনতা ও তথ্যের নিরাপত্তা বিষয়ে একটি নাটিকা তৈরি করব। এই নাটিকার পেছনে থাকবে একটি গল্প, যেটি আমরা নিজেরাই লিখব। গল্পের চরিত্রগুলোতে আমরাই অভিনয় করব। নাটিকাটির নির্দেশনাও আমরা দিব।
এবার তিনটি দলে ভাগ হয়ে, কোনো একটি সাইবার অপরাধ ও তার প্রতিকার অথবা সাইবার অপরাধ সম্পর্কে সচেতনতায় তিনটি নাটিকার স্ক্রিপ্ট লেখব। আমরা নাটিকার স্ক্রিপ্টটি এমনভাবে লিখবো যাতে সেটি পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে প্রদর্শন করা যায়।
প্রতি দলের আবার কাজ ভাগ করা থাকবে কারা নাটিকাটি পরিচালনা করবে, কারা লেখবে, কারা অভিনয় করবে ইত্যাদি। প্রথমে আমরা আমাদের দলের নাম, দলের সদস্যদের নাম এবং নাটিকার নামটি লিখে ফেলি। (পাঠ্য বইয়ের ৪৯-৫১ পৃষ্ঠার কাজ)
নাটিকার নাম : সাইবার বুলিং
দলের নাম : শাপলা
সদস্যদের নাম :
রাকিব (গল্পের পরিচালক)
জহির (গল্পের লেখক)
তামান্না (অভিনয়কারী)
ইসতিয়াক (অভিনয়কারী)
কারিনা (অভিনয়কারী)
সিয়াম (অভিনয়কারী)
এরপর আমরা ঠিক করব আমাদের নাটিকার গল্পটি কী হবে এবং তাতে কী কী চরিত্র থাকবে। সেটি নিচের ঘরে লিখে ফেলি।
তামান্না ইসতিয়াক ও কারিনার কাছ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে জানতে পারে। তারপর সে অনেক আগ্রহ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি একাউন্ট খুলে নেয়। কিছুদিন পর তামান্নার সাথে যা ঘটল….
নাটকের চরিত্রসমূহ-
তামান্না
ইসতিয়াক
কারিনা
সিয়াম
এখন আমরা দৃশ্যগুলো একে একে লিখে ফেলব। বাড়তি কাগজ লাগলে আমাদের নিজেদের খাতার কাগজ ব্যবহার করব।
দৃশ্য ১ :
ইসতিয়াক: জানিস আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় কত কিছু করা যায়।
কারিনা: হ্যাঁ তুই কি জানিস আমারো একটি সোশ্যাল মিডিয়া রয়েছে।
সিয়াম : সোশ্যাল মিডিয়াতে আমি ও অনেক একটিভ।
তামান্না: সোশ্যাল মিডিয়া কী?
ইসতিয়াক: হা হা হা… তুই সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে জানিস না? সোশ্যাল মিডিয়া একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। যেমন- ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছবি আপলোড করা যায়, বিভিন্ন লেখা বা তথ্য পোস্ট করা যায়, শেয়ার করা যায়, কাউকে বন্ধু বানানো যায়, জানিস স্কুলের বাহিরেও আমার অনেক জেলার সোশ্যাল মিডিয়াতে বন্ধু রয়েছে।
তামান্না: তাই নাকি, তাহলে আমিও একটি অ্যাকাউন্ট খুলবো। সোশ্যাল মিডিয়াতে অ্যাকাউন্ট খুলতে কী কী লাগে?
কারিনা: আরে বোকা এটাও জানিস না তুই । গুগলে গিয়ে সার্চ করলেই সব পেয়ে যাবি ।
ইসতিয়াক: তোর টেনশন করার কোন কারণ নেই । তুই আমাকে বলিস, আমি তোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে একাউন্ট খুলে দিব ।
তামান্না: ঠিক আছে তাহলে আজকে বাসায় গিয়ে তোদের সহায়তায় একাউন্ট খোলার চেষ্টা করব।
দৃশ্য ২
তামান্না বাসায় আসলো। মোবাইল ব্যবহার করে ইসতিয়াকের পরামর্শে যা যা তথ্য প্রয়োজন সবই দিয়ে একটি ফেসবুক একাউন্ট খুলল। অতঃপর বন্ধুদের সবাইকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালো।
তামান্না একটি নিজের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করল। তার বন্ধুরা ভালো ভালো কমেন্ট করল। তা পড়ে তামান্না অনেক খুশি হলো। তার কিছুদিন পর সে লক্ষ করল তার ছবিটি পাবলিক পোস্ট হয়েছে এবং ছবি নিয়ে অনেকে মন্তব্য করছে। তার মধ্যে কিছু মানুষ অনেক আজে-বাজে কমেন্ট করতে শুরু করল। অপরিচিত একটি ছেলে পোস্ট করল চেহারায় ময়দা মাখছো? তুই এতো মুটো হলি কেমনে? মুটো হওয়ার ট্রিপসটি দিয়ে যাও।
বাজে মন্তব্যগুলো দেখে তামান্নার বড় ভাই বিরক্ত হয়ে তামান্নাকে অনেক বকা-ঝকা করল। তামান্না এখন তার বন্ধুদের সাথে পরামর্শ করতে গেলো।
কারিনা: কিরে তুকে এতো আপসেট দেখাচ্ছে কেন? কী হয়েছে?
ইসতিয়াক: আরে কথা বল না, কী হয়েছে বল।
তামান্না: আজকে আমাকে আমার বড় ভাই অনেক বকা দিয়েছে, কেন সোশ্যাল মিডিয়াতে একাউন্ট খুললাম। নিজের ছবি পোস্ট করলাম। কিছু খারাপ লোকের আজে-বাজে মন্তব্য দেখে ভাইয়া খুবই রাগলো। আমাকে খুবই বকলো।
সিয়াম: আরে সবইতো শুনলাম। তুই এ বিষয়টি নিয়ে একধম গাবরাবে না। আমি বিষয়টি কীভাবে হ্যান্ডল করতে হয় তা দেখছি।
ইসতিয়াক: আমি দেখলাম তামান্নার ছবিটি পাবলিক পোস্ট হয়েছে। বাজে মন্তব্য গুলো দূর করার জন্য সিয়াম কী করা যায়?
সিয়াম: আমি জানি কী করতে হবে। আমরা প্রথমে প্রশাসনের সাইবার ট্রাইবুনালসাইটে ব্যাপারটি নিয়ে একটি অভিযোগ বা জিডি করতে পারি।
তামান্না: তাহলে এখনই অভিযোগটি অনলাইনে সাবমিট করে দিই।
তারপর তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে সাইবার ট্রাইবুনাল পোস্টটি ফেসবুক থেকে ডিলেট করে দেয়। সাইবার ট্রাইবুনাল তামান্নাকে পোস্ট করার সময় কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে বলে।
আমরাও এখন থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনো ছবি বা তথ্য পোস্ট করার সময় আরো বেশি সচেতন হবো।
এরপর আমরা ক্লাসের সব নাটিকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে তা প্রদর্শনীর আয়োজন করব। তিনটি নাটিকার প্রদর্শনীই আমাদের শিক্ষক তার মোবাইল ফোনে ধারণ করবেন। ধারণকৃত নাটিকার ভিডিওগুলো আমাদের শিক্ষক সংগ্রহ করবেন। পরবর্তী সেশনগুলোতে আমরা আমাদের নিজেদের দলের নাটিকার প্রদর্শনীর ভিডিওটি এডিটিং করা শিখব।
অথবা আমাদের নাটিকার গল্পগুলো থেকে সাইবার অপরাধ থেকে সচেতন থাকার জন্য যে মূল বার্তাগুলো দিব তা নির্দিষ্ট জায়গায় লেখে রাখব। পরবর্তী সময় সেশনগুলোতে আমাদের দলের নাটিকাটির মূল বার্তাগুলো নিয়ে ইনফোগ্রাফি তৈরি করব। তিনটি দলের তিনটি ইনফোগ্রাফি তৈরি শেষে আমাদের শ্রেণির দেওয়ালে টানিয়ে সকলের জন্য প্রদর্শনীর আয়োজন করব। পরবর্তীকালে এই ইনফোগ্রাফি গুলো আমাদের বিদ্যালয়ের জরুরি সেবা কেন্দ্রে সংরক্ষণ করব।