প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, নতুন বছরের শুভেচ্ছা। তোমরা ইতোমধ্যে শিক্ষাজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় ‘প্রাথমিক শিক্ষা’ পার করে মাধ্যমিক পর্যায় শুরু করতে যাচ্ছ। এটি নিঃসন্দেহে একটি উল্লেখযোোগ্য ব্যাপার। তোমাকে অভিনন্দন! নতুন বই, নতুন বন্ধু, কারও কারও ক্ষেত্রে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নতুন স্কুলের পোশাক; সবকিছু মিলিয়ে খুব মজার কিছু শুরু হতে যাচ্ছে, তাই না?
তোমরা সত্যই সৌভাগ্যবান, কারণ তোমরা এমন একটি সময়ে বড় হচ্ছ যখন চারপাশে নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার হচ্ছে, যা আমাদের জীবনকে সহজ করে দিচ্ছে এবং পালটে দিচ্ছে। এই সময়কে প্রযুক্তির বিপ্লবের সময় বলা হয়। যে উপকরণ মানুষের কাজকে সহজ করে দেয়, সেগুলোই প্রযুক্তি।
ঘর ঠান্ডা রাখতে বৈদ্যুতিক পাখা, অল্প সময়ে অনেক বই তৈরির জন্য ছাপানোর মেশিন, দ্রুত কোনো জায়গায় পৌঁছানোর জন্য চাকা ও গাড়ি ইত্যাদি প্রযুক্তির উদাহরণ। তোমাদের সামনে আছে প্রচুর সম্ভাবনা। নতুন নতুন প্রযুক্তি যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করে দেয়, তেমনি নতুন প্রযুক্তিকে ব্যবহার করাও জানতে হয়। শুধু তা-ই নয়, প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে জীবনের নানারকম সমস্যার সমাধানও করতে হয়।
এভাবে প্রযুক্তি আমাদের জীবনে অনেক সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। তাই প্রযুক্তিকে ভয় না পেয়ে এটিকে আরও গভীরভাবে বুঝতে হবে। কেউ কেউ হয়তো ভাবছ, তোমাদের বাড়িতে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট নেই, তাহলে তোমরা কীভাবে প্রযুক্তিকে বুঝতে পারবে! তোমাদের জন্য বলি, বাড়িতে বা বিদ্যালয়ে যে বৈদ্যুতিক বাতিটি আছে; অথবা তোমাদের পরিবারের সদস্যের যে মোবাইল ফোনটি আছে, এগুলোও কিন্তু একটি প্রযুক্তি।
প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ থাকলে, অনুসন্ধান করার ইচ্ছা থাকলে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে যে তোমাদের একবারে হাতের মুঠোয় থাকতে হবে, এমন কিন্তু নয়। তাই এই বই তোমাদের জন্য সাজানো হয়েছে একটু অন্যভাবে, এখানে প্রযুক্তি হাতের কাছে না থাকলেও প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে এবং তা দিয়ে কীভাবে জীবনের সমস্যা সমাধান করা যায় সে সম্পর্কে তোমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে যোগ্যতা অর্জন করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
জানা এবং অভিজ্ঞতা লাভ শুধু শ্রেণিকক্ষে হবে- তা কিন্তু নয়, বরং তোমাদের বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে, খেলার মাঠে, বিদ্যালয়ের চারপাশে এবং বাড়িতেও অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ আছে, তাই আশেপাশের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে জানা এবং অভিজ্ঞতা লাভের জন্য কাজটি করতে হবে।
তোমরা তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে না; বরং সহযোগিতার মাধ্যমে সবাই মিলে একসঙ্গে জানবে। আমাদের বিদ্যালয়, সমাজ, দেশ তখনই উন্নতি লাভ করবে, যখন আমরা সবাই মিলে উন্নতি করব, সবাই মিলে অবদান রাখব। তোমাদের জন্য শুভকামনা।
তোমাদের পাঠ্য বই ডিজিটাল প্রযুক্তি বইটি পিডিএফ ভার্সন দেখতে ও ডাউনলোড করতে লিংকে ক্লিক কর। Digital Projukti Class Six
এই শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমরা যে যোগ্যতা অর্জন করব-
১। তথ্য অনুসন্ধানে যথাযথ উৎসের ব্যবহার, তথ্য অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করবো।
২। তথ্য ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যথাযথ উৎস উল্লেখ, তথ্য যাচাই, তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে তথ্যের যথার্থতা নির্ণয় করতে পারবো।
৩। ভুল তথ্য আদান প্রদানের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হবো এবং তথ্য ব্যবহারে দায়িত্বশীল আচরণ করতে পারবো।
সেশন-১ ( খুঁজে বের করি একটি দৈনন্দিন সমস্যা ) পাঠ্য বই পৃষ্ঠা-১
আমরা দৈনন্দিন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হই। আমাদের এ সমস্যাগুলো সমাধান করার প্রয়োজন হয়। সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন হয় তথ্য। তথ্য আমরা বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করতে পারি। তবে এক্ষেত্রে আমাদের নিরাপদ উৎস খুঁজে বের করতে হবে।
তথ্য কী ?
তথ্য হচ্চে কোন ব্যক্তি বা বিষয়বস্তু সংক্রান্ত বার্তা যা আমরা বলতে বা লিখতে পারি। যেমন- তোমার নাম, তোমার বয়স, তোমার উচ্চতা, তোমার শখ, তোমার বিদ্যালয়ের নাম, তুমি কোন শ্রেণিতে পড়ো এই সবই হচ্ছে তথ্য।
এখন আমরা পাঠ্য বইয়ে ১ পৃষ্ঠায় দেয়া সারণি:১.১ পূরণ করবো।
তথ্যের প্রয়োজনীয়তা:
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে তথ্যের প্রয়োোজন হয়। ঘুম থেকে উঠে ঘড়ির সময় দেখা থেকে শুরু করে ঘুমানোর আগে আমাদের পরের দিন বিদ্যালয়ে আসার প্রস্তুতি হিসেবে ব্যাগ গোছানোর সময় সেশন রুটিন দেখে নেওয়া-সব কাজেই তথ্যের প্রয়োোজন হয়। দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি মুহূর্তে ছোট-বড় সিদ্ধান্ত নিতে তথ্যের প্রয়োজন হয়।