ফাতেমা ফারজানার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অসাধারণ বক্তব্য

ফাতেমা ফারজানার কন্ঠে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ বক্তব্য-আমার বঙ্গবন্ধু-বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র শেরেবাংলা নগর, আগারগাঁও, ঢাকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে ‘আমার বঙ্গবন্ধু শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতায়’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় ১৭টি হলকে পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন হন ফাতেমা ফারজানা। তার উপস্থাপনা ও বাচনভঙ্গি বিচারকদের মুগ্ধ করেছেন।

“I will sacrifice my life if necessary to eliminate all injustice, and exploitation from our country. My greatest strength is the love for my people, and my greatest weakness is that I love them too much.”- বলেছিলেন একজন মহানায়ক ‍Sir David Frost এর নেওয়া এক ইন্টারভিউতে। হ্যাঁ, তিনি আমার ভালোবাসা, একজন বঙ্গবন্ধু। আমার বঙ্গবন্ধু শুধুই একজন মহান নেতৃত্ব নয়, তিনি একজন দার্শনিক, যিনি মুক্তিযুদ্ধের ২০ বছর আগে থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন।

আমার বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের ছিনিয়ে আনা লাল-সবুজের পতাকা। একটি ইতিহাস, একটি মহাকাব্য, একটি বাংলাদেশ। আমার বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে গোপালগঞ্জের টুঙ্গি পাড়ায় দুরন্ত খোকার কাছে। ছোটবেলা থেকেই যিনি শীতার্তদের শীতবস্ত্র এবং ক্ষুধার্তকে খাদ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন। মাত্র ২৯ বছর বয়সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালীন অবস্থায় চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজের ছাত্রত্ব হারালেও মাথা নত করেননি কখনো।

আমার বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তার দৃঢ়-বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে আমাদেরকে দিয়ে গেছেন স্বাধীন বাংলাদেশ। যার ফলস্বরূপ তার ৫৬ বছর বয়সের জীবনের ৪৬৮২ টা দিন তাকে কাটাতে হয়েছে কারাগারের কাল কুঠুরিতে। আমার বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের মাত্র ১৮ মিনিটের এক ভাষণে এক আঙ্গুল উঁচিয়ে সারা বাংলাদেশের সাত কোটি মানুষকে শিখিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্, স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বাধীনতার।

স্বাধীনতার পর এই আমার বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে বাংলা ভাষার মান সমোন্নত করেছেন। কিন্তু হায়! দুর্ভাগ্য আমাদের, ধরে রাখতে পারিনি আমরা আমাদের বঙ্গবন্ধুকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতক সেনার হাতে আমার বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন।

আমার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিউবার নেতা ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন ”I have not seen the Himalayas. But I have seen Sheikh Mujib.” ঠিক সেরকমই হিমালয়ের মতন তিনি তার প্রশস্ত বুক দিয়ে আমাদের এই বাংলাদেশকে আগলে রেখেছিলেন।

আজ আমার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বলতে গেলে হয়তো মহাকাব্য রচনা হয়ে যাবে কিন্তু কথা ফুরোবেনা। আমার বঙ্গবন্ধু একটি চেতনার নাম, যিনি জাগ্রত আছেন প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে। আমার বঙ্গবন্ধু জাগ্রত আছেন ১০ বছরের শিশুর মুজিব কোট গায়ে দিয়ে এক আঙ্গুল উঁচিয়ে ৭ মার্চের ভাষণ মুখস্ত বলাতে। আমাদের চেতনায় তিনি চির অম্লান, চিরভাস্বর।

আমার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা মহাদেব সাহার ‘আমি কি বলতে পেরেছিলাম’ কবিতার ছোট্ট একটি অংশ দিয়ে শেষ করতে চাই। “তবু শেষবার ঘুমিয়ে পড়ার আগে তাকে আমার বলতে ইচ্ছে করছিলো, সারা বাংলায় তোমার সমান উচ্চতার আর কোনো লোক দেখিনি আমি।” তাইতো বার্লিনে যখন একজন ভায়োলিন বাদক আমার কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল, আমি আমার বুক পকেট থেকে দশ টাকার একখানি নোট বের করে শেখ মুজিবের ছবি দেখেছিলাম। বলেছিলাম- দেখো এই আমার বাংলাদেশ। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *