নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের প্রক্রিয়া | New Curriculum Evaluation System

সুপ্রিয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতি রইল সালাম ও শভেচ্ছা। এই পোস্টে আমি নতুন শিক্ষাক্রম বা কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের প্রক্রিয়া ( New Curriculum Evaluation System) ধারাবাহিকভাবে  সম্পূর্ণ  উপস্থাপন করেছি। আশাকরি সবাই এতে উপকৃত হবেন।

নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য শিখনকালীন ধারাবাহিক মূল্যায়ন, ষান্মাসিক ও সামষ্টিক মূল্যায়ন নির্ধারণ করা হয়েছে।

Table of Contents

নতুন কারিকুলামের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া-

মূল্যায়ন হবে তিন উপায়ে-
                                           ১। শিখনকালীন মূল্যায়ন
                                           ২। সামষ্টিক মূল্যায়ন
                                                       ক) ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন
                                                       খ) বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়ন
                                           ৩। আচরণিক মূল্যায়ন

শিখনকালীন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকরা প্রতিটা শিখন অভিজ্ঞতাপর শিক্ষার্থীদেরকে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করবেন। তবে এক্ষেত্রে আচরণিক মূল্যায়ন কার্যক্রম প্রতিটি সেশন বা ক্লাসে শিক্ষক মূল্যায়ন করে তথ্য সংরক্ষণ করবেন। মূল্যায়নে সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে শিখনকালীন মূল্যায়ন, সামষ্টিক মূল্যায়নের সমন্বয়ে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধ -বার্ষিক মূল্যায়নের ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি করবেন।

বছরের শেষ দিকে ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের ট্রান্সক্রিপ্ট, পাঠ্য বইয়ের বাকি শিখন অভিজ্ঞতাগুলোর  শিখনকালীন মূল্যায়ন,  বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সমন্বয়ে বার্ষিক চূড়ান্ত ট্রান্সক্রিপ্ট প্রণয়ন করবেন।

মাউশির প্রদত্ত পারদর্শিতার সূচক (PI-Performance Indicator) এবং আচরণিক সূচক (BI-Behavioural Indicator) আলোকে মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করে Noipunno(নৈপুণ্য) App বা ওয়েবসাইটে মাউশির নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় তথ্য ইনপুট করে শিক্ষার্থীদের জন্য চূড়ান্ত রিপোর্ট কার্ড বা পাদর্শিতার সনদ তৈরি করবেন।

অর্ধ-বার্ষিক ট্রান্সক্রিপ্ট

শিখনকালীন মূল্যায়ন + ষাল্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন 

বার্ষিক চূড়ান্ত ট্রান্সক্রিপ্ট

ষাল্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ট্রান্সক্রিপ্ট + শিখনকালীন মূল্যায়ন  + বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়ন

শিখনকালীন মূল্যায়ন প্রক্রিয়া-

এই মূল্যায়ন কার্যক্রমটি শিখনকালীন অর্থাৎ শিখন অভিজ্ঞতা চলাকালে পরিচালিত হবে।
শিখনকালীন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্রতিটি শিখন অভিজ্ঞতা শেষে শিক্ষক সংশ্লিষ্ট শিখনযোগ্যতা মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত পারদর্শিতার সূচক বা PI ব্যবহার করে শিখনকালীন মূল্যায়নের রেকর্ড সংরক্ষণ করবেন। প্রতিটি শিখন অভিজ্ঞতায় কোন কোন PI এর তথ্য ইনপুট দিতে হবে এবং কোন শিখন কার্যক্রম দেখে দিতে হবে তা মাওশি কর্তক প্রদত্ত বিষয়ভিত্তিক নির্দেশিকা দেখে মূল্যায়ন করতে হবে।

এখানে আমরা ৬ষ্ট শ্রেণির ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি’ বিষয়ের শিখনকালীন মূল্যায়নের PI ও তথ্য উপস্থাপন করা হলো। অন্যান্য বিষয়সমূহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ভিত্তিক PI  এর আলোকেই শিখনকালীন মূল্যায়ন করতে হবে।

যে শিখন কার্যক্রমগুলো পর্যবেক্ষণ করবেন-

মাউশির প্রদত্ত বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন ছকে লক্ষ করলে দেখা যাবে সেখানে পারদর্শিতার সূচকের টপিক ও তিনটি মাত্রার পাশাপাশি ছকের সর্বশেষ কলামে পাঠ্য বইয়ের  পৃষ্ঠা, ছক বা ঘর, সারণি, সেশনের কোন অংশ  শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ করবেন তা উল্লেখ আছে।  শিখনকালীন মূল্যায়ন প্রক্রিয়াবে

প্রতিটি শিখন অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের তথ্য ইনপুট দেয়ার সুবিধার্থে একটি ছক দেয়া আছে। এই ছকে নির্দিষ্ট শিখন অভিজ্ঞতার নাম ও প্রযোজ্য PI নম্বর লিখে ধারাবাহিকভাবে সকল শিক্ষার্থীর মূল্যায়নের তথ্য রেকর্ড করা হবে। শিক্ষক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পারদর্শিতার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট PI এর জন্য প্রদত্ত তিনটি মাত্রা থেকে প্রযোজ্য মাত্রাটি নির্ধারণ করবেন এবং সে অনুযায়ী চতুর্ভূজ, বৃত্ত, বা ত্রিভূজ  ভরাট করবেন। নিচে উক্ত ছকের নমুনা দেওয়া হলো।

নতুন শিক্ষাক্রমের পারদর্শিতা সূচক রেকর্ড শীট

শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় এই ছকের প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফটোকপি করে তার সাহায্যে শিখন অভিজ্ঞতাভিত্তিক মূল্যায়নের রেকর্ড সংরক্ষণ করতে হবে। শিখনকালীন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষক যে সকল শিখন কার্যক্রম দেখে পারদর্শিতার সূচকে শিক্ষার্থীর অর্জনের মাত্রা নিরূপণ করবেন সেগুলোর তথ্যপ্রমাণ (শিক্ষার্থীর কাজের প্রতিবেদন, অনুশীলন বইয়ের লেখা, পোস্টার, লিফলেট, ছবি ইত্যাদি) শিক্ষাবর্ষের শেষদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করবেন।

ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রক্রিয়া

শিখনকালীন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শিখন অভিজ্ঞতা চলাকালে শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতার উপর ভিত্তি করে শিক্ষক মূল্যায়ন করেছেন। সামষ্টিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও অনুরূপ একটি নির্ধারিত কাজ শিক্ষার্থীরা সমাধান করবে, এই কাজ চলাকালে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ, কাজের প্রক্রিয়া, ইত্যাদি সবকিছুই মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিবেচিত হবে। মূল্যায়নের নির্ধারিত কাজ ঘোষণা থেকে শুরু করে এই কার্যক্রম চলাকালে বিভিন্নভাবে শিক্ষক শিক্ষার্থীদেরকে সহায়তা দেবেন, তবে প্রজেক্টের কাজের প্রক্রিয়া কী হবে বা সমস্যা সমাধান কীভাবে করতে হবে তা শিক্ষার্থীরাই নির্ধারণ করবে।


ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের তথ্য সংগ্রহের জন্য পুনরায় ছক ব্যবহার করতে হবে। শিখনকালীন মূল্যায়নের মতোই এই ছক ব্যবহার করে নির্ধারিত পারদর্শিতার সূচকে শিক্ষার্থীর অর্জনের মাত্রা নিরূপণ করতে হবে। রেকর্ড ছকের নমুনা নিচে দেওয়া হলো।

ষান্মাসিক-সামষ্টিক-মূল্যায়ন-শীট

সাধারণ নির্দেশনা:

শুরুতেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সামষ্টিক মূল্যায়ন কীভাবে পরিচালিত হবে দায়িত্বরত শিক্ষক তার নিয়মাবলি শিক্ষার্থীদের জানাবেন। এই মূল্যায়ন চলাকালে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রত্যাশা কী সেটা যেন তারা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে। শ্রেণির মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত কাজটি ভালোভাবে বুঝে নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিন যাতে সবাই ধাপগুলো ঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারে।

শিক্ষার্থীরা ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য প্রদত্ত কাজটি করতে ৭ দিন সময় পাবে। এর মধ্যে তাদের রুটিন অনুযায়ী যে কয়টি সেশন বরাদ্দ তার মধ্যেই কাজটি শেষ করতে হবে। অন্য সকল বিষয়ের মতো ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ের সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্যেও একটা নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করা থাকবে, যেদিন শিক্ষার্থীরা পুরো কাজের চূড়ান্ত উপস্থাপন করবে।

শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ কাজ সেশন চলাকালেই করবে, বাড়িতে গিয়ে করার জন্য খুব বেশি কাজ না রাখা ভালো। মনে রাখতে হবে এই পুরো প্রক্রিয়া যাতে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসিক চাপ সৃষ্টি না করে এবং পুরো অভিজ্ঞতাটি যেন তাদের জন্য আনন্দময় হয়।

উপস্থাপনে যথাসম্ভব বিনামূল্যের উপকরণ ব্যবহার করতে নির্দেশনা দেবেন, উপকরণ সংগ্রহ করতে গিয়ে অভিভাবকদের যাতে কোনো আর্থিক চাপের সম্মুখীন হতে না হয় সেদিকে নজর রাখবেন। শিক্ষার্থীদের মনে করিয়ে দিন, মডেল/পোস্টার/ছবি ইত্যাদির চাকচিক্যে মূল্যায়নে হেরফের হবে না। বরং বিনামূল্যের বা স্বল্পমূল্যের উপকরণ, সম্ভব হলে ফেলনা জিনিস ব্যবহারে উৎসাহ দিন।

বিষয়ভিত্তিক তথ্যের প্রয়োজনে অনুসন্ধানী পাঠ বই বা যেকোনো উৎস শিক্ষার্থী ব্যবহার করতে পারবে। তবে কোনো উৎস থেকেই হুবহু তথ্য তুলে দেয়ায় উৎসাহ দেবেন না, বরং তথ্য ব্যবহার করে সে নির্ধারিত সমস্যার সমাধান করতে পারছে কি না, এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারছে কি না তার উপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করবেন।

বছর জুড়ে পুরো শিখন কার্যক্রম চলাকালে শিক্ষার্থীদের আচরণ, দলীয় কাজে অংশগ্রহণ, আগ্রহ, সহযোগিতামূলক মনোভাব ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে এই সূচকসমূহে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অর্জনের মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। পারদর্শিতার সূচকের পাশাপাশি  আচরণিক সূচকে অর্জনের মাত্রাও প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ষাণ্মাসিক ট্রান্সক্রিপ্টের অংশ হিসেবে যুক্ত থাকবে।

পূর্বের নির্দেশনা অনুযায়ী ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ও শিখনকালীন মূল্যায়নের সমন্বয়ে মূল্যায়ন ট্রান্সক্রিপ্ট প্রস্তুত করতে হবে।

ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন প্রজেক্ট :

আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে প্রোফাইল তৈরি

১। শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দলে ভাগ করে দিয়ে তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান (পারদর্শিতা নির্দেশক ৬.১) করতে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে দল অনুযায়ী কিছু থিমে তাদের অনুসন্ধানের পরিধি নির্ধারণ করে দিতে হবে।
যেমন –
দল ১ – বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী যারা নিজেদের মেধা এবং সৃজনশীলতার প্রমাণ করে পেশাক্ষেত্রে  সফলতা অর্জন করেছেন/করছেন তাদের তথ্য সংগ্রহ করা।

দল ২ – বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক যারা আন্তরিকতার সাথে শিক্ষকতা করেছেন এবং শিক্ষার্থীদের প্রিয় শিক্ষক ছিলেন তাদের তথ্য সংগ্রহ করা।

দল ৩ – শিল্প- সংস্কৃতি, খেলাধুলা বা অন্যান্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য প্রতিষ্ঠানের অর্জিত স্বীকৃতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা।

দল ৪ – বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মৃতি বিজড়িত গল্প  সংগ্রহ করা।

দল ৫ – বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মৃতি বিজড়িত ছবি সংগ্রহ করা।

দল ৬ -বিদ্যালয় সম্পর্কে স্থানীয় বা জাতীয় পত্রিকায়, ম্যাগাজিন, প্রকাশনায়, ইন্টারনেটে কোন তথ্য, খবর, ছবি ইত্যাদি যে কোন উৎস থেকে সংগৃহীত তথ্য।

২। শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত থিম দলীয় হলেও শিক্ষার্থী এককভাবে নির্ধারিত থিম অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ করবে।

৩। নির্ধারিত থিমে তথ্য সংগ্রহের জন্য শিক্ষার্থী পরবর্তী সেশন পর্যন্ত সময় পাবে।

৪। শিক্ষার্থী সংগৃহীত তথ্য নিজের দলের সবার সাথে আলোচনা করবে যেন নিজেদের তথ্যের মধ্যে পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

৫। আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ঠিক করবে তারা নিজেদের সংগৃহীত তথ্য কীভাবে উপস্থাপন করতে চায়।

৬। ডিজিটাল প্রেজেন্টেশন, দেয়ালিকা, চিত্র প্রদর্শনী, অডিও/ ভিডিও ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থী উপস্থাপনার জন্য কনটেন্ট তৈরির পরিকল্পনা করবে।

৭। কনটেন্ট তৈরির পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থী ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ের মূল্যায়নের দিন পর্যন্ত সময় পাবে।

৮। শিক্ষার্থী ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ের মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত দিনে প্রথম তিন ঘণ্টা শিক্ষার্থী এককভাবে কনটেন্ট তৈরি করবে  । পরবর্তী এক ঘণ্টা দলীয়ভাবে কনটেন্ট উপস্থাপন করবে। শেষ ৩০ মিনিট উপস্থাপন শেষে পুরো কাজে নিজের অভিজ্ঞতা, কাজে নিজের ভূমিকা, এবং নিজের অনুভূতি মিলিয়ে দুই পৃষ্ঠার মধ্যে একটি অ্যাসাইনমেন্ট লিখে শিক্ষকের কাছে জমা দিবে।

৯। কনটেন্ট তৈরির জন্য শিক্ষক বিদ্যালয়ের সহজলভ্য যা প্রযুক্তিগত সুবিধা আছে (কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন) তা শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে হবে।

১০। শিক্ষার্থী কনটেন্ট উপস্থাপনে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের দায়িত্বশীল ব্যবহার নিশ্চিত করবে (পারদর্শিতা নির্দেশক ৬.৬) ।

মূল্যায়ন প্রজেক্ট তৈরিতে শিক্ষকের কাজ :

১। শিক্ষক নির্দেশনাটি পাওয়া পর শিক্ষার্থীদের পুরো কাজটি বুঝিয়ে বলবেন।
২। শিক্ষার্থীদের দলে ভাগ করে থিম ভাগ করে দিবেন।
৩। তথ্য অনুসন্ধানের জন্য শিক্ষার্থীদের কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হলে (কার সাথে যোগাযোগ করবে, ইন্টারনেট এর প্রয়োজন হলে ব্যবস্থা করে দেওয়া ইত্যাদি) প্রয়োজনীয় সাহায্য করবেন।
৪। তিনদিন পর শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছে কিনা তা নিশ্চিত করবেন এবং দলগুলো একসাথে আইডিয়া এবং তথ্য শেয়ারের ব্যবস্থা করে দিবেন।
৫। দলে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া, তথ্য শেয়ারের সময় এবং কনটেন্ট তৈরির পরিকল্পনার সময় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ করবেন।
৬। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ের মূল্যায়নের দিন শিক্ষক অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী সম্ভব হলে অভিভাবক যেন উপস্থাপনের সময় উপস্থিত থাকে তা নিশ্চিত করবেন।
৭। উপস্থাপন চলবে এক ঘণ্টা।
৮। উপস্থাপনের সময় শিক্ষক সরবরাহকৃত ছক অনুযায়ী পর্যবেক্ষণ এবং প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীর যোগ্যতা অর্জনের কোন ধাপে আছে তা নির্ধারণ করবেন।

 শিক্ষার্থীদের-মূল্যায়ন-প্রজেক্টের-কাজ-এক-নজরে.

ষান্মাসিক মূল্যায়নের ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি

শিখনকালীন ও ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অর্জিত পারদর্শিতার মাত্রার ভিত্তিতে তার ষান্মাসিক মূল্যায়নের ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি করা হবে। ট্রান্সক্রিপ্টের ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত অর্জনের মাত্রা চতুর্ভুজ, বৃত্ত, বা ত্রিভুজ  চতুর্ভুজ, বৃত্ত, বা ত্রিভুজ দিয়ে প্রকাশ করা হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, শিখনকালীন ও সামষ্টিক মূল্যায়নে একই পারদর্শিতার সূচকে একাধিকবার তার অর্জনের মাত্রা নিরূপণ করতে হতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে, একই পারদর্শিতার সূচকে কোনো শিক্ষার্থীর দুই বা ততোধিক বার ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার পর্যবেক্ষণ পাওয়া যেতে পারে।

এক্ষেত্রে, কোনো একটিতে—
যদি সেই পারদর্শিতার সূচকে ‘ত্রিভুজ’  চিহ্নিত মাত্রা অর্জিত হয়, তবে ট্রান্সক্রিপ্টে ‘ত্রিভুজ’ উল্লেখ করা হবে।

যদি কোনোবারই ‘ত্রিভুজ’ চিহ্নিত মাত্রা অর্জিত না হয়ে থাকে তবে দেখতে হবে অন্তত একবার হলেও বৃত্ত চিহ্নিত মাত্ৰা শিক্ষার্থী অর্জন করেছে কিনা; করে থাকলে  ট্রান্সক্রিপ্টে বৃত্ত  উল্লেখ করা হবে।

যদি সবগুলোতেই শুধুমাত্র ‘চতুর্ভুজ’ চিহ্নিত মাত্রা অর্জিত হয়, শুধুমাত্র সেই ক্ষেত্রে ট্রান্সক্রিপ্টে ‘চতুর্ভুজ’ লিপিবদ্ধ করা হবে।

অর্ধবার্ষিক-মূল্যায়ন-শেষে-শিক্ষার্থীর-ট্রান্সক্রিপ্ট-ফরম্যাট.

শিক্ষার্থীদের আচরণিক মূল্যায়ন

শিখন কার্যক্রম চলাকালে শিক্ষার্থীদের আচরণ, দলীয় কাজে অংশগ্রহণ, আগ্রহ, সহযোগিতামূলক মনোভাব ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আচরণিক সূচকের অর্জনের মাত্রাও নির্ধারণ করতে হবে। পারদর্শিতার সূচকের পাশাপাশি এই আচরণিক সূচকে অর্জনের মাত্রাও প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ষাণ্মাসিক ট্রান্সক্রিপ্টের অংশ হিসেবে আচরণিক মূল্যায়নের তালিকা তৈরি ও সংরক্ষণ করতে হবে। নিচে আচরণিক সূচকের তালিকা উপস্থাপন করা হলো-

শিক্ষার্থীদের আচরণিক সূচকের তালিকাশিক্ষার্থীদের আচরণিক সূচকের তালিকা

সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রক্রিয়া

ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের পর পাঠ্য বইয়ের বাকি শিখন অভিজ্ঞতার আলোকে  শিখনকালীন ধারাবাহিক মূল্যায়ন ও বছরের শেষে বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ও রেকর্ড পূর্বের মূল্যায়ন কার্যক্রমের ন্যায় সম্পন্ন করতে হবে।

শিখনকালীন, ষান্মাসিক ও বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়ন সমন্বয়:

ইতোমধ্যে ষান্মাসিক মূল্যায়নের সময় প্রথম কয়েকটি শিখন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের PI ইনপুট এর সমন্বয়ে শিক্ষকরা ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি করেছেন। একইভাবে বাৎসরিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের ট্রান্সক্রিপ্ট, বাকি শিখন অভিজ্ঞতাগুলোর শিখনকালীন মূল্যায়নের PI ইনপুট এবং বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সমন্বয়ে ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি করতে হবে।

চূড়ান্ত ট্রান্সক্রিপ্ট

ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের মতোই বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে নির্বাচিত পারদর্শিতার নির্দেশকসমূহ ব্যবহার করে মূল্যায়নের তথ্য রেকর্ড করতে হবে। ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের ট্রান্সক্রিপ্ট, বাকি শিখন অভিজ্ঞতাগুলোর শিখনকালীন মূল্যায়নের PI ইনপুট এবং বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সমন্বয়ে শিক্ষার্থীর চূড়ান্ত ট্রান্সক্রিপ্ট ও রেকর্ড প্রস্তুত করতে হবে।

এক্ষেত্রেও পূর্বের ন্যায় বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে করা মূল্যায়নের তথ্যে একই পারদর্শিতার নির্দেশকে কোনো শিক্ষার্থীর অর্জনের মাত্রা বা পর্যায় ভিন্ন ভিন্ন হলেও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রণয়নের ক্ষেত্রে PI এর সর্বোচ্চ যেই পর্যায়ের ইনপুট পাওয়া যাবে সেটিই ট্রান্সক্রিপ্টে উল্লেখ করতে হবে।

বার্ষিক চূড়ান্ত মূল্যায়ন (সকল মূল্যায়নের PI সমন্বয়)

শিক্ষার্থীদের বাৎসরিক আচরণিক মূল্যায়ন (BI)

ষান্মাসিক মূল্যায়নের মতোই বছর জুড়ে পুরো শিখন কার্যক্রম চলাকালে শিক্ষার্থীদের আচরণ, দলীয় কাজে অংশগ্রহণ, আগ্রহ, সহযোগিতামূলক মনোভাব ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে এই নির্দেশকসমূহে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অর্জনের মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। পারদর্শিতার নির্দেশকের পাশাপাশি এই আচরণিক নির্দেশকে অর্জনের মাত্রাও প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বাৎসরিক ট্রান্সক্রিপ্টের অংশ হিসেবে যুক্ত থাকবে, নির্দিষ্ট ছক ব্যবহার করে আচরণিক নির্দেশক মূল্যায়নের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।

প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ১০ টি বিষয়ের আচরণিক নির্দেশকের অর্জিত মাত্রা বা পর্যায়ের সমন্বয় করে চুড়ান্ত ট্রান্সক্রিপ্ট প্রণয়ন করতে হবে। প্রধান শিক্ষক/শ্রেণি শিক্ষক/প্রধান শিক্ষক কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ১০ জন বিষয় শিক্ষকের কাছ থেকে প্রাপ্ত BI এর ইনপুট সমন্বয় করে আচরণিক নির্দেশকের ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি করবেন।

১০টি বিষয়ের আচরণিক নির্দেশের সমন্বয়

একটি আচরণিক নির্দেশকের জন্য ১০টি বিষয়ে একজন শিক্ষার্থী যেই পর্যায়টি সবচেয়ে বেশি বার পাবে সেইটিই হবে ঐ আচরণিক নির্দেশকে শিক্ষার্থীর অর্জিত চূড়ান্ত পর্যায়। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন শিক্ষার্থী আচরণিক নির্দেশকের ক্ষেত্রে ৪টি বিষয়ে বৃত্ত, ৩টি বিষয়ে ত্রিভুজ এবং ৩টি বিষয়ে চতুর্ভুজ পায়, তবে ১ম আচরণিক নির্দেশকে তার অর্জিত চূড়ান্ত পর্যায় হলো বৃত্ত

যদি কোনো শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট কোনো আচরণিক নির্দেশকের ক্ষেত্রে কোনো একটি পর্যায়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক বার ইনপুট না পায়, অর্থাৎ একাধিক পর্যায়ে সমান সংখ্যক ইনপুট পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে তারমধ্যে অর্জিত সর্বোচ্চ পর্যায় বিবেচনা করতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন শিক্ষার্থী আচরণিক নির্দেশকের ক্ষেত্রে ৪টি বিষয়ে ত্রিভুজ, ৪টি বিষয়ে বৃত্ত এবং ২টি বিষয়ে চতুর্ভুজ পায়, তাহলে এই নির্দেশকের ক্ষেত্রে তার অর্জিত চূড়ান্ত পর্যায় হবে ত্রিভুজ।
আবার কোনো শিক্ষার্থী একই নির্দেশকের ক্ষেত্রে যদি ৪টি বিষয়ে বৃত্ত, ২টি বিষয়ে ত্রিভুজ এবং ৪টি বিষয়ে চতুর্ভুজ পায়, তবে তাহলে এই নির্দেশকের ক্ষেত্রে তার অর্জিত চূড়ান্ত পর্যায় হবে বৃত্ত।

রিপোর্ট কার্ড বা পাদর্শিতার সনদ তৈরি

ইতোমধ্যেই আপনারা ষান্মাসিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে ট্রান্সক্রিপ্ট প্রস্তুত করেছেন, যেখানে সকল পারদর্শিতার নির্দেশক বা PI সমূহে শিক্ষার্থীর অর্জিত পর্যায়ের বিবরণ থাকে। এই ট্রান্সক্রিপ্টে নির্দিষ্ট বিষয়ের জন্য শিক্ষার্থীর পারদর্শিতার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। বছর শেষে এক নজরে সকল বিষয়ে শিক্ষার্থীর সার্বিক অবস্থান তুলে ধরতে একটি রিপোর্ট কার্ড প্রণয়ন করা হবে যেখানে প্রতিটি বিষয়ে তার সার্বিক পারদর্শিতার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া থাকবে, যা থেকে শিক্ষার্থী নিজে এবং অভিভাবকরা সহজেই শিক্ষার্থীর অবস্থান বুঝতে পারেন। পরিশিষ্ট ৬ এ রিপোর্ট কার্ডের ফরম্যাট সংযুক্ত করা আছে। মুলত মূল্যায়ন অ্যাপের মাধ্যমেই ট্রান্সক্রিপ্ট এবং রিপোর্ট কার্ড স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হবে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে অ্যাপ থেকে সম্ভব না হলে শিক্ষকগণ এই ফরম্যাট ফটোকপি করে ম্যানুয়ালি রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুত করতে পারেন।

রিপোর্ট কার্ডে কোনো বিষয়েরই PI সমূহ উল্লেখ করা থাকবে না। বরং প্রতিটি বিষয়ে শিক্ষার্থীর সার্বিক অবস্থান কয়েকটি নির্দিষ্ট পারদর্শিতার ক্ষেত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। আপনারা জানেন, কোন শ্রেণীর কোন নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা যাচাই করতে প্রতিটি একক যোগ্যতার জন্য এক বা একাধিক PI নির্ধারণ করা আছে। তেমনি কোন শ্রেণীর কোন নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে পরষ্পর সম্পর্কযুক্ত একক যোগ্যতাসমূহে শিক্ষার্থীর অর্জন সমন্বিতভাবে প্রকাশ করার জন্য নির্দিষ্ট পারদর্শিতার ক্ষেত্রচিহ্নিত করা হয়েছে। (পারদর্শিতার ক্ষেত্রসমূহ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখায় প্রদত্ত বিষয়ের ধারণায়নে বর্ণিত ডাইমেনশন থেকে
নেয়া হয়েছে। কারণ বিষয়ভিত্তিক একক যোগ্যতাসমূহ মুলত এই ডাইমেনশন গুলোকে কেন্দ্র করেই করা হয়েছে।
বিষয়টি দেখা যায় এভাবে:

শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতার ক্ষেত্র বা ডাইমেনশন-

শিক্ষার্থীদের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে প্রতিটি বিষয়ে যতটি PI আছে সেগুলোকে বাংলায় ৫টি ডাইমেনশনে, ইংরেজিতে ৪টি , গণিতে ৫টি , বিজ্ঞানে ৫টি , ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ৪টি , ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানে ৫টি , জীবন ও জীবিকা ৪টি , ইসলাম শিক্ষা ৩টি , স্বাস্থ্য সুরক্ষা ৩টি, শিল্প ও সংস্কৃতি ৩টি ডাইমেনশনে ভাগ করে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতাকে রিপোর্ট কার্ডে প্রদশন করা হয়েছে। যেমন- ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নিচে দেওয়া ৪টি ডাইমেনশনে বা সক্ষমতাতে ভাগ করা হয়েছে PI গুলোকে।

১। ডিজিটাল সাক্ষরতা
২। আইসিটি সক্ষমতা
৩। ডিজিটাল সলিউশান উদ্ভাবন
৪। আইসিটির নিরাপদ, নৈতিক ও দায়ীত্বশীল ব্যবহার

প্রতিটি পারদর্শিতার ক্ষেত্রের জন্য সংশ্লিষ্ট PI সমূহে শিক্ষার্থীর অর্জিত পর্যায়সমূহ সমন্বয় করে ঐ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর অবস্থান নিরূপণ করা হবে।

পারদর্শিতার ক্ষেত্রের বর্ণনা

রিপোর্ট কার্ড বা সনদে প্রতিটি পারদর্শিতার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর অবস্থান সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা থাকবে। এখানে উল্লেখ্য, পারদর্শিতার ক্ষেত্রের শিরোনাম দিয়ে শিক্ষার্থী আদৌ কী করতে পারে তা স্পষ্ট হয় না, তাই প্রতি শ্রেণির জন্য পারদর্শিতার ক্ষেত্রের একটি বর্ণনা প্রণয়ন করা হয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ের পারদর্শিতার ক্ষেত্রসমূহে ষষ্ঠ শ্রেণির জন্য নির্ধারিত পারদর্শিতার বর্ণনা নিম্নরূপ:

পারদর্শিতার ক্ষেত্রের বর্ণনা

পারদর্শিতার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর অবস্থান কীভাবে নিরূপিত হবে?

প্রতিটি পারদর্শিতার ক্ষেত্রের জন্য আলাদা আলাদাভাবে শিক্ষার্থীর অবস্থান নির্ধারণ করা হবে। যেহেতু প্রতিটি বিষয়ে পারদর্শিতার নির্দেশকের সংখ্যা অনেকগুলো এবং এদের পর্যায় মাত্র ৩টি, এর সাহায্যে শিক্ষার্থীর সার্বিক অবস্থান বোঝা সম্ভব হয় না। সেজন্য প্রতিটি পারদর্শিতার ক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট PI সমূহে শিক্ষার্থীর অর্জিত পর্যায়সমূহের সমন্বয় করে ওই ক্ষেত্রে তার অবস্থান বোঝানো হবে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক সকলেই যাতে শিক্ষার্থীর অবস্থান স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে এজন্য এই অবস্থানকে একটি ৭-স্তর বিশিষ্ট মূল্যায়ন স্কেল দিয়ে প্রকাশ করা হবে।

পারদর্শিতার এই স্তরগুলো নিম্নরূপ:

১. অনন্য (Upgrading)

২. অর্জনমুখী (Achieving)

৩. অগ্রগামী (Advancing)

৪. সক্রিয় (Activating)

৫. অনুসন্ধানী (Exploring)

৬. বিকাশমান (Developing)

৭. প্রারম্ভিক (Elementary)

৭-স্তর বিশিষ্ট মূল্যায়ন স্কেল

পারদর্শিতার স্তর নির্ণয়ের উপায়

পারদর্শিতার স্তর নির্ণয়ের উপায়

পারদর্শিতার স্তর নির্ণয়ের উপায়

পারদর্শিতার স্তর নির্ণয়ের উপায়

 

বার্ষিক চূড়ান্ত মূল্যায়ন (সকল মূল্যায়নের PI সমন্বয়)

একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ রিপোর্ট কার্ড / পাদর্শিতার সনদ/ রেজাল্ট কার্ড-

একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ রিপোর্ট কার্ড বা পারদর্শিতার সনদ

একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ রিপোর্ট কার্ড বা পারদর্শিতার সনদ

একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ রিপোর্ট কার্ড বা পারদর্শিতার সনদ

একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ রিপোর্ট কার্ড বা পারদর্শিতার সনদ

একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ রিপোর্ট কার্ড বা পারদর্শিতার সনদ

 

আচরণিক নির্দেশকের জন্য চিহ্নিত ক্ষেত্রসমূহ

পারদর্শিতার ক্ষেত্রের মতই আচরণিক নির্দেশকের জন্যেও নির্দিষ্ট কিছু আচরনিক ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট আচরণিক নির্দেশকসমূহে শিক্ষার্থীর অর্জিত পর্যায় সমন্বয় করে নির্দিষ্ট আচরণিক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ফলাফল নিরূপণ করা হবে। রিপোর্ট কার্ডে পারদর্শিতা ও আচরণিক ক্ষেত্র দুইই উল্লেখ করা থাকবে, যা দেখে শিক্ষার্থীর সার্বিক অবস্থার একটি চিত্র বোঝা যাবে।

শ্রেণি শিক্ষক/প্রতিষ্ঠান প্রধান/প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষার্থীর রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুত করবেন, বিষয় শিক্ষক তার নির্দিষ্ট বিষয়ের পারদর্শিতার ক্ষেত্রসমূহে শিক্ষার্থীর অবস্থান নিরূপণ করে বিষয়ভিত্তিক ফলাফল জমা দেবেন। আচরণিক ক্ষেত্রের জন্য শ্রেণি শিক্ষক/প্রতিষ্ঠান প্রধান/প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষার্থীর চূড়ান্ত ফলাফল তৈরি করবেন।

রিপোর্ট কার্ডে উল্লেখিত আচরণিক ক্ষেত্রগুলো নিম্নরূপ:

১। অংশগ্রহণ ও যোগাযোগ

২। নিষ্ঠা ও সততা

৩। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতা

ট্রান্সক্রিপ্টে উল্লেখিত ১০টি আচরণিক নির্দেশকের প্রত্যেকটি উপরের কোনো না কোনো ক্ষেত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট। PI এর ইনপুট হিসেব করে যেভাবে বিষয়ভিত্তিক পারদর্শিতার ক্ষেত্রে ফলাফল নিরূপণ করা হবে, একইভাবে BI এর ইনপুটের ভিত্তিতে উপরের ৩টি আচরণিক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর অবস্থান নিরূপণ করতে হবে। সকল শ্রেণির জন্য একই আচরণিক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ফলাফল নির্ধারণ করা হবে। পারদর্শিতার ক্ষেত্রের মতই আচরণিক ক্ষেত্রের জন্যেও সংশ্লিষ্ট BI এ শিক্ষার্থীর অর্জিত পর্যায় একই সুত্র ব্যবহার করে হিসেব করে ৭ স্তর বিশিষ্ট স্কেলে শিক্ষার্থীর অবস্থান নিরূপণ করা হবে।

আচরণিক ক্ষেত্র

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *